শিরোনামঃ

ববির পরিবহন খাতে চরম দুরবস্থা: প্রশাসনের আশ্বাসে নেই বাস্তব উদ্যোগ



ওয়াহিদ-উন-নবী, ববি প্রতিনিধি


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) পরিবহন ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলা ও সংকট বিরাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও ভাড়াকৃত মিলে মোট ২৩টি বাস থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল বলে অভিযোগ তাদের।


শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বাস শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থায় চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। এছাড়া একাধিক বাস দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেসবিহীন অবস্থায় চলাচল করছে। বিষয়টি একাধিকবার প্রশাসনের নজরে আনলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।


তারা আরও অভিযোগ করেন, ভাড়াকৃত বিআরটিসির দ্বিতল বাসগুলোতে প্রায়ই দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বাসের দরজায় ঝুলে যাতায়াত করেন—যা বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। তাদের মতে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই নিতে হবে।


ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বিপ্লব বলেন, “১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ২১টি বাস—এটা একেবারেই অপর্যাপ্ত। বরিশাল ক্লাব রুটে চলা কিছু বিআরটিসি বাসের ফিটনেস নেই। রাতের বেলায় নথুল্লাবাদ রুটে জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আসতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে পানি ঢুকে ব্যাগ ও কাগজপত্র নষ্ট হয়। প্রশাসন শুধু আশ্বাস দেয়, বাস্তব সমাধান নেই।”


অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া শিকদার বলেন, “প্রথম বর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ছোট বাস, ভাঙা ফ্যান, ধাক্কাধাক্কি—সবকিছুই সহ্য করছি। রাতে নথুল্লাবাদ থেকে ফেরার সময় ডবল ডেকারে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় আমাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। প্রশাসনের কাছে আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।”


দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার সায়েম বলেন, “করোনার পর থেকে নতুন ব্যাচ যুক্ত হয়েছে, বিভাগগুলোর আসনও বেড়েছে, কিন্তু বাস বা অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়েনি। পুরনো বাসগুলোও সংস্কার ছাড়া চলছে। ফলে পরিবহন সংকট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। দূরবর্তী শিক্ষার্থীরাও পরিবহন ফি দেয়—তাই নতুন বাস সংযোজন ও রুট সম্প্রসারণ জরুরি।”


এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, “শিক্ষার্থীদের পরিবহন খাতের সমস্যার বিষয়ে আমি প্রক্টর ও পরিবহন পুলের ম্যানেজারকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছি। বিস্তারিত জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।”


তবে প্রক্টর ও পরিবহন পুলের ম্যানেজারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরো খবর

অনলাইন ভোট

খবর সরাসরি ইনবক্সে পেতে চান?