শিরোনামঃ

মান্থা নারীরা: নদীর বুক থেকে জীবনের সংগ্রাম


বরিশাল প্রতিনিধি

গৌরব কর্মকার,


বরিশালের নদীবেষ্টিত অঞ্চলগুলোতে এখনো একটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বসবাস করে, যাদের স্থানীয়ভাবে ডাকা হয় মান্থা। জলকেন্দ্রিক এই জীবনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যুক্ত মান্থা নারীরা। নদীর ঢেউ আর বঞ্চনার স্রোতের মাঝেই তাদের প্রতিদিনের সংগ্রাম।নদীই যেন তাদের একমাত্র ভরসা

মান্থা নারীদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাছ ধরা, শামুক-ঝিনুক কুড়ানো কিংবা নদীর তীরে ছোটখাটো কাজ। ভোরের আলো ফোটার আগেই তারা নামেন খালে-বিলে ও নদীতে। সারাদিনের পরিশ্রমে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে পরিবার। স্থানীয় এক মান্থা নারী বললেন,
“আমরা পড়াশোনা করিনি। নদীতে না নামলে সংসার চলে না। সন্তানদেরও কাজে নিতে হয়।”



এই সম্প্রদায়ের নারীরা এখনো শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। বাল্যবিবাহ ও দরিদ্রতার কারণে অধিকাংশের পড়াশোনা থেমে যায় ছোটবেলাতেই। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হন তারা। সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে গেলে তাদের অনেক সময় অবহেলার সম্মুখীন হতে হয়।

মান্থা নারীদের প্রতি সমাজের একাংশের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বৈষম্যমূলক। অনেকেই তাদেরকে ‘ভিন্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করে দূরে রাখেন। ফলে সরকারি সহায়তা বা নারী উন্নয়ন কর্মসূচির সুবিধা পাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।


স্থানীয় সমাজকর্মী নিপা নাথ বলেন,
“মান্থা নারীদের মূলধারায় আনতে হলে তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণের সুযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে সমাজে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে তারা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারেন।”

কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও মান্থা নারীরা আগামীর স্বপ্ন দেখেন—সন্তানদের পড়াশোনা করানো, নিরাপদ বাসস্থান পাওয়া, এবং একদিন সমাজে সমান মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকা।

এই বিভাগের আরো খবর

অনলাইন ভোট

খবর সরাসরি ইনবক্সে পেতে চান?