শিরোনামঃ

বিনা উপকেন্দ্র গোপালঞ্জের উদ্যোগে বিনাধান-২১ জাতের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত


স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : বিনাধান-২১ স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন একটি আউশ ধানের জাত। জাতটির জীবনকাল ১০৫ দিন অর্থাৎ বীজ তলায় বীজ বপন থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত মোট ১০৫ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। গবেষকরা উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ ফলন পেয়েছিলেন সাড়ে ৫টন। অর্থাৎ প্রতি শতাংশে ২০ কেজি ফলন পেয়েছিলেন।


বিনা উপকেন্দ্র গোপালগঞ্জের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার হোসেনপুর ইউনিয়নের নাগরদি গ্রামের কৃষক হরিচাঁদ বালা বিনাধান-২১ আবাদ করেছিলেন চলতি আউশ মৌসুমে।


এ উপলক্ষে বিনা উপকেন্দ্র গোপালঞ্জের আয়োজন অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উৎপল রায়। 


বিনা উপকেন্দ্র, গোপালগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রাজৈর উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাশ্বতী ছন্দা দেবনাথ, অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিনা উপকেন্দ্র গোপালগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ অধিকারী। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিনা উপকেন্দ্র গোপালগঞ্জের সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব নির্মল কুমার দে। অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক কৃষক ও কৃষাণী স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন এবং উক্ত ধানের চাষাবাদে ব্যাপকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ধান বেটে পরিমাপ করা হয়।


কৃষক হরিচাঁদ বালা বলেন, আজ থেকে প্রায় ১০৭ আগে এই ধান বীজ বপন করেন। ২৫ দিন বয়সের চারা রোপণ করে ধান কাটা হয়। প্রতি শতাংশ থেকে প্রায় ২০ কেজি করে ধানের ফলন পেয়েছেন তিনি। যা হেক্টরে প্রায় ৫ টনের সমান।


রাজৈর উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাশ্বতী ছন্দা দেবনাথ বলেন, আউশ ধানের এই জাতটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে এবং স্থানীয় কৃষকরা যৌথভাবে এই জাতটি চাষ করলে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। ফলে আর্থিকভাবে তারা লাভবান হবেন। বিনা ভবিষ্যতে এরকম আরো উন্নত এবং নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করে ও কৃষকদের মাঝে জাতগুলো সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের কৃষক ও কৃষিতে ব্যাপক অবদান রাখবে।


অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিনাধান-২১ এর ফলন খুবই চমৎকার এবং এই জাতটি কৃষকের মাঝে আগামীতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 


অনুষ্ঠানের সভাপতি বিনা উপকেন্দ্র গোপালগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এই বিনাধান-২১ জাতটি আফ্রিকার Nerica জাত থেকে গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করা হয়েছে বিধায় জাতটি কম সেচ সুবিধায় এবং তুলনামূলক উচু জমিতে উচ্চ ফলন প্রদান করার ক্ষমতা সম্পন্ন। জাতটি থেকে পাওয়া চাল ঝরঝরে এবং সুস্বাদু। জীবনকাল খুবই কম হওয়ায় অল্প সময়ে কৃষক ভালো ফলন পেতে পারেন। এতে সার, সেচ ও কীটনাশক এর পরিমাণ খুবই কম প্রয়োজন হয়। তিনি আশাবাদ করেন কৃষকরা এই জাতটি আগামীতে এই এলাকায় ব্যাপকভাবে চাষ করবেন। 


প্রধান অতিথি মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত উপপরিচালক জনাব উৎপল রায় বলেন, বিনা তার গবেষণার মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে যা দেশের কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। বিনার এমনই একটা উচ্চ ফলনশীল জাত বিনাধান-২১ এবং এই জাতটি এই এলাকার জন্য খুবই উপযোগী তার প্রমাণ হচ্ছে আজকের এই শস্যকর্তনের ফলাফল।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষাণীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন কৃষি সূচনা যেমন নারীদের হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল আমরা আশা করি আগামীতে এই এলাকায় বিনাধান-২১ জাতটি চাষাবাদ করতে কৃষানীরা নিজেরা উদ্যোগী হবেন এবং কৃষকদেরকে উৎসাহিত করবেন। #

এই বিভাগের আরো খবর

অনলাইন ভোট

খবর সরাসরি ইনবক্সে পেতে চান?