শিরোনামঃ

চাঁদার খোলসে ‘টুর্নামেন্ট’: ববি-তে অমৃত লাল দে কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হৃদয়ের বিতর্কিত ভূমিকা


ওয়াহিদ-উন-নবী, ববি প্রতিনিধি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) "শহীদ স্মৃতি শর্টপিচ টুর্নামেন্ট" আয়োজনের আড়ালে চাঁদা সংগ্রহের একটি সুপরিকল্পিত অভিযোগ উঠে এসেছে অমৃত লাল দে কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। নেতৃত্বে রয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের স্বঘোষিত সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী মোহাম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয়।


বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদ স্মরণে খেলাধুলার ব্যানারে চলা এই কার্যক্রম মূলত শিক্ষকদের কাছ থেকে “গণচাঁদা” সংগ্রহের একটি নতুন মোড়ক মাত্র। চিঠি ধরিয়ে চাঁদার দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন বিভাগ ও প্রশাসনিক দপ্তরে। অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা এ ঘটনাকে ‘বিব্রতকর’ ও ‘অযাচিত চাপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষক অভিযোগ করেন, চাঁদা না দেওয়ার কারণে হৃদয় তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িয়ে অপ্রীতিকর মন্তব্য করেন বলে দাবি ওঠে।


একজন অর্থ দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, "যেহেতু এটি একটি কলেজভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠান, সেহেতু আমাদের মতো বাইরেরদের কাছ থেকে চিঠি দিয়ে টাকা চাওয়া অনুচিত। আমরা সরকারি চাকরিজীবী; সরাসরি না বলতে পারলেও বিষয়টি অস্বস্তিকর।"


বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, হৃদয় তার একক সিদ্ধান্তে অমৃত লাল দে কলেজ অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে সেখানে ইচ্ছামতো নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সংগঠনের ব্যানারে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন সুবিধা আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।


উল্লেখ্য, হৃদয় এর আগেও ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে চাঁদা তোলার অভিযোগে বিতর্কিত ছিলেন। যদিও বর্তমানে তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চলেছেন। ‘দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা’ নামক একটি অনলাইন পত্রিকার ‘সিনিয়র রিপোর্টার’ পরিচয় দিয়ে তিনি দাবি করেন, শহীদদের স্মরণে খেলাধুলার আয়োজন তাদের উদ্যোগ, এবং কেউ চাইলে স্বেচ্ছায় অর্থ দিতে পারেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, চাঁদা তোলার অনুমতি নেওয়া হয়নি।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, “টুর্নামেন্ট আয়োজনে লিখিত অনুমতি নিলেও অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে মৌখিক বা লিখিতভাবে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।”


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজ সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “এই ধরনের চাঁদাবাজি আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অবমাননাকর। প্রশাসনের উচিত এসব বিষয়ে তৎপর থাকা।”

এই বিভাগের আরো খবর

অনলাইন ভোট

খবর সরাসরি ইনবক্সে পেতে চান?