বরিশাল-২ আসনে ক্লীন ইমেজের প্রার্থী ব্যারিস্টার সাইফ
হাসান মাহমুদ : দরজায় কড়া নাড়ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চুড়ান্তকরণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চুড়ান্ত করাসহ ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীকে প্রাধান্য দিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্তবর্তীকালীণ সরকারের দায়িত্বশীল উপদেষ্ঠারাও ফেব্রæয়ারীতে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন। নির্বাচনের এই আবহে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করে প্রার্থী হওয়ার জানান দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল-২ আসনে (উজিরপুর-বানারীপাড়া) বিএনপি থেকে কমপক্ষে হাফ ডজন নেতা মনোনয়ন চাইবেন। এসব নেতারা এরইমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করছেন। এছাড়াও জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থীরাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল-২ আসনে বিএনপি থেকে যে ক’জন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। তার মধ্যে তরুন ও যুব সমাজের কাছে অধিক গ্রহনযোগ্য প্রার্থী হচ্ছেন তিন বারের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ প্রয়াত সৈয়দ শহীদুল হক জামালের ছোট ছেলে এলাকায় ক্লীন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইফুল হক সাইফ।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বিএনপি কিংবা অন্যান্য দলের বেশি সংখ্যক মনোনয়ন প্রত্যাশী উজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা। এক্ষেত্রে বানারীপাড়া থেকে প্রার্থীর সংখ্যা কম। সেই হিসেবে উজিরপুর থেকে অধিক সংখ্যক প্রার্থী হলে ভোট ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারনে বানারীপাড়া উপজেলা থেকে শক্ত প্রার্থী হিসেবে ব্যারিষ্টার সাইফ আবির্ভূত হলে নির্বাচনী হিসেব-নিকেশ পাল্টে যাবে।
দুই উপজেলার প্রবীন বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি’র সাবেক প্রয়াত মন্ত্রী শহিদুল হক জামাল তিনবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীণ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। পাশাপাশি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে স্কুল-কলেজ নির্মান করেছেন। এছাড়াও বিপুল সংখ্যক দরিদ্র পরিবারের বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরী দিয়ে এলাকায় গরীবের বন্ধু “ভাইজান” নামে পরিচিত হয়ে ওঠেছিলেন। যে কারনে দলমত নির্বিশেষে শহীদুল হক জামাল আপামর সাধারণ মানুষের প্রিয়পাত্র ছিলেন। ২০২০ সালে তিনি প্রয়াত হলেও দুই উপজেলায় এখনো জামাল পরিবারের বিশাল একটি ভোট ব্যাংক ও শত শত কর্মী-সমর্থক রয়েছে।
বিএনপি নেতারা আরও জানিয়েছেন, শহিদুল হক জামালের মৃত্যুর পর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ব্যারিস্টার সাইফ এলাকায় সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে আসছেন। এছাড়াও প্রতিনিয়ত দরিদ্র মানুষের পাশে দাড়িয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। সেক্ষেত্রে আসছে নির্বাচনে জামাল পুত্র সাইফকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে বরিশাল-২ আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর সহিদুল ইসলাম বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্লীন ইমেজের প্রার্থী দিবে বিএনপি। সেক্ষেত্রে ক্লীন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে উজিরপুর-বানারীপাড়ায় ব্যারিস্টার সাইফুল হক সাইফের বিকল্প কেউ নাই। উচ্চ শিক্ষিত ও তরুন সমাজসেবক হিসেবে দুই উপজেলাতেই তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। নিজ উপজেলা বানারীপাড়ায় যেমন তার বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক রয়েছে; তেমনি সাইফের মামা বাড়ি উজিরপুরেও ব্যাপক জনপ্রিয় তরুন এ উদীয়মান নেতা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ার পার্সনের উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য প্রয়াত মন্ত্রী শহিদুল হক জামাল এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন। যে কারনে আপামর জনতা এখনো একজন জামালকে খুঁজে বেড়ায়। তাই এলাকাবাসী ও কর্মী সমর্থকদের দাবী ব্যারিস্টার সাইফ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে অংশগ্রহন করলে পাল্টে যাবে দৃশ্যপট।
বানারীপাড়া পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের যুগ্ন আহবায়ক খলিলুর রহমান চোকদার জানিয়েছেন, ব্যারিস্টার সাইফের বাবার যে সুনাম এবং তিনি এলাকায় যেসব উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রেখেছেন তাতে দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয় তবে অনেকের চেয়ে তিনি ভাল করবেন।
এবিষয়ে ব্যারিস্টার সাইফুল হক সাইফ বলেন, আমার বাবা বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে দেশের সেবা করে গেছেন। বাবার মৃত্যুর ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এলাকার মানুষ তাকে এখনো ভুলে যায়নি। তার মৃত্যুর পর এলাকার উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে আমিও সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছি। তাই এলাকাবাসী চাচ্ছেন অন্তত বাবার স্মৃতি রক্ষায় ত্রয়োদশ নির্বাচনে আমি যেন প্রার্থী হই।